বিবাহ আসরে নাবালিকার বিয়ে বন্ধ ময়নায়। দিনটা ছিল ১১ই ফেব্রুয়ারি, মঙ্গলবার। সকাল থেকে শুরু হয়েছে গায়ে হলুদ থেকে শুরু করে অন্যান্য বিয়ের সামগ্রী উপকরণ। সন্ধ্যা হতেই একদিকে চলছে রান্না, অন্যদিকে আলোর রোশনাই। প্রশাসনকে বুড়ো আঙ্গুল দেখিয়ে ঘটা করে বিয়ের আয়োজন করেছে বাড়ির নাবালিকা মেয়ের। কিন্তু শেষ রক্ষা করতে পারল না পরিবারের লোকজন। প্রবাদ আছে পূর্ব মেদিনীপুরের ময়নায় শিক্ষিতের হার বেশি। এই নিয়ে বিভিন্ন স্কুলে চলছে সচেতনতা শিবির। আর সেই সব নিয়মকে বুড়ো আঙ্গুল দেখিয়ে একটি গেস্ট হাউসে আয়োজন করেছে নাবালিকার বিয়ে। জানা যায় নাবালিকার বাড়ি পূর্ব মেদিনীপুরের ময়না ব্লকের পরমানন্দপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের মথুরিচক গ্রামে। সন্ধ্যে থেকে আলোর রোশনাই এবং সানায়ের সুরে মেতে উঠেছে বিয়ে মন্ডপ। কে বা জানত শেষ পর্যন্ত এমনই পরিনত হবে। এই নাবালিকার বিয়ের খবর স্থানীয় সূত্র মারফত জানতে পারে ময়না ব্লকের বিডিও সমীর পান। তিনি তৎক্ষণাৎ নড়েচড়ে বসে। তিনি তৎক্ষণাৎ ঘটনাস্থলে পাঠান ময়না ব্লকের জয়েন্ট বিডিও অনির্বাণ সাহা এবং ময়না থানার পুলিশ প্রশাসনকে। সময়টা প্রায় সন্ধ্যা সাড়ে সাতটা। ততক্ষণে পুরনো কুটুম,বন্ধু-বান্ধব উপস্থিত হতে শুরু করে দিয়েছে। কিন্তু তখনো বর সহ বরযাত্রী এসে পৌঁছায়নি। ব্লক প্রশাসন এবং পুলিশ প্রশাসন ঘটনাস্থলে পৌঁছাতে একটা নীরবতা বিরাজ করে এলাকায়। ডাক করা হয় নাবালিকার বাবা ও মাকে। প্রথমে অস্বীকার করলেও পরে ময়না ব্লকের জয়েন বিডিও অনির্বাণ সাহার হাতে আধার কার্ডের কপি পড়তেই পরিষ্কার। নাবালিকার বাবা সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে জানান তার মেয়ে দশম শ্রেণীতে পড়ে। বয়স ১৭ বছর ৩ মাস। তিনি ভুল করেছে, বলে এমনই মন্তব্য করেন। নাবারিকার মা জানান, আমরা ভুল করেছি আমরা বুঝতে পারিনি। আমরা আত্মীয়দের খাওয়ানোর পর বিয়ে বন্ধ করে দেব। জানা যার ছেলের বাড়ি পূর্ব মেদিনীপুরের নরঘাটে। যতদিন না পর্যন্ত মেয়ের বয়স ১৮ বছর হয় ততদিন মেয়ের বিয়ে দেবে না, এমনই লিখিত জানালেন মেয়ের বাবা ও মা। কিছুক্ষণের মধ্যে আনন্দের সানাই , আলোর রোসনাই সব বন্ধ হয়ে যায়। যেখানে প্রত্যেকদিন সচেতনতা নিয়ে বিভিন্ন বিদ্যালয়ে শিবির চলছে, সেখানে এ ধরনের ভুল এখনো হয়।
0 Comments