পূর্ব মেদিনীপুর জেলা পরিষদে মেন্টর পদে দায়িত্ব নিলেন অখিল, অনুষ্ঠানে সভাধিপতি উত্তম সহ একঝাঁক নেতার অনুপস্থিতি ঘিরে দিনভর জল্পনা !

তমলুক, পূর্ব মেদিনীপুর : রাজ্য সরকারের নির্দেশে পূর্ব মেদিনীপুর জেলা পরিষদের মেন্টর পদে শপথ নিলেন অখিল গিরি। শুক্রবার দলের একঝাঁক নেতা কর্মীর পাশাপাশি প্রশাসনিক আধিকারীকদের উপস্থিতিতে জেলা পরিষদের মেন্টর হিসেবে দায়িত্বভার গ্রহণ করেন তিনি। তবে তাঁর এই দায়িত্ব গ্রহণের অনুষ্ঠানে দেখা গেল না জেলা পরিষদের সভাধিপতি উত্তম বারিক সহ জেলার বেশ কয়েকজন বিধায়ককে। এমনকি সদ্য দায়িত্বপ্রাপ্ত কো মেন্টর তাপসী মন্ডলকেও এই অনুষ্ঠানে দেখা গেল না। যাকে ঘিরে দিনভর চর্চা চলল জেলা পরিষদের অন্দরে। যদিও এই বিষয়ে অখিলের যুক্তি, “সভাধিপতি সহ বেশ কয়েকজন কাজে ব্যস্ত থাকায় আসতে পারেননি। তবে এর জন দলের মধ্যে কোনও বিভাজনের চেষ্টা করা ঠিক হবে না” ।
রাজ্য সরকারেরপঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দফতর সম্প্রতি বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানায় পূর্ব মেদিনীপুর জেলা পরিষদের মেন্টর হিসেবে রামনগরের বিধায়ক প্রাক্তন মন্ত্রী অখিল গিরি এবং সদ্য বিজেপি থেকে তৃণমূলে যোগ দেওয়া হলদিয়ার বিধায়ক তাপসী মন্ডলকে কো-মেন্টর হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হচ্ছে। রাজ্য সরকারেরর নির্দেশ মতোই আজ শুক্রবার মেন্টর হিসেবে জেলা পরিষদে দায়িত্ব গ্রহণ করেন অখিল গিরি। তাঁর এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন চন্ডীপুরের তারকা বিধায়ক সোহম চক্রবর্তী, তমলুকের বিধায়ক প্রাক্তন মন্ত্রী সৌমেন মহাপাত্র এবং পাঁশকুড়ার বিধায়ক মন্ত্রী বিপ্লব রায়চৌধুরী প্রমূখরা। এছাড়াও জেলা পরিষদের মৎস্য কর্মাধ্যক্ষ তরুণ জানা, শিক্ষা ও ক্রীড়া অপর্ণা ভট্টাচার্যও এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। তবে উল্লেখযোগ্য ভাবে অনুষ্ঠানে অনুপস্থিত ছিলেন সভাধিপতি তথা এগরার বিধায়ক উত্তম বারিক সহ মহিষাদল ও নন্দকুমারের বিধায়ক।
এদিনের অনুষ্ঠান শেষে সংবাদ মাধ্যমের প্রতিনিধিদের তরফ থেকে এই বিষয়ে একের পর প্রশ্নবান ছুটে আসে অখিল গিরির দিকে। সভাধিপতি উত্তম বারিক সহ গুরুত্বপূর্ণ একঝাঁক নেতা অনুষ্ঠানে অনুপস্থিত কেন তা জানতে চাওয়া হয়। জবাবে অখিল জানান, “আমরাসবাই মিলে এখানে উপস্থিত হয়েছি। তবে সভাধিপতি উত্তম এগরায় নিজের কাজে ব্যস্ত বলে আসতে পারেননি। কোমেন্টর জানিয়েছেন আজ স্ট্যান্ডিং কমিটির মিটিংয়ে যোগ দিতে গিয়েছেন। অন্যরাও কাজে ব্যস্ত থাকায় আসেননি। তবে এই নিয়ে প্রকাশ্য দ্বৈরথ বলে বিভাজনের চেষ্টা করবেন না”। অখিল জানান, “আমরা সবাই একসঙ্গে কাজ করি। আমাদের কোনও ঠান্ডা লড়াই নেই। কাজের ক্ষেত্রে সামান্য মতবিরোধ হতে পারে তবে উন্নয়নের কাজে আমরা সর্বদা একজোট হয়েই কাজ করছি”।
যদিও অখিলের এই যুক্তিকে খন্ডন করেছেন জেলা পরিষদের বিরোধী দলনেতা বিজেপির বামদেব গুছাইত। বামদেবের দাবী, “পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় তৃণমূলের কোনও অভিভাবক নেই। দলের মধ্যে উত্তম বারিক বনাম অখিল গিরি দ্বৈরথ সবার জানা। তৃণমূল যে আড়াআড়ি বিভক্ত তা আরও একবার স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে আজকের অনুষ্ঠানে”। বামদেবের মতে, “মানুষের উন্নয়নের থেকে এই নেতারা গোষ্ঠী কোন্দল নিয়েই বেশী মাতোয়ারা। যার ফল সাধারণ মানুষকে ভুগতে হচ্ছে” বলে জানিয়েছেন তিনি।
0 Comments