মুম্বাই রোডের কোলাঘাট থেকে মেচগ্রাম পর্যন্ত পুলিশী নজরদারি বাড়ানো সহ দুই থানার বর্ডার বরদাবাড় ও জিঞাদার মাঝে পুলিশ পিকেটের দাবীতে জেলা শাসক ও পুলিশ সুপারের নিকট স্মারকলিপি।

গত ২৯ জুলাই বেলা সাড়ে ১১ টা থেকে ১২ টা নাগাদ একদল দুষ্কৃতকারী কোলাঘাট থানার অন্তর্গত ১৬ নম্বর জাতীয় সড়কে(মুম্বাই রোডের)দেউলবাড় সংলগ্ন স্থানে এক ইন্টেরিয়র ডিজাইনারের ব্যবসায়ী(যার বাড়ি বর্ধমানের দেবীপুর থানার মেমারিতে)কৃশানু সামন্তকে জোরপূর্বক বোলারো গাড়িতে তুলে অপহরণ করে। যার কাছে ছিল নগত সাড়ে তিন লক্ষ টাকা। রাস্তা পার্শ্ববর্তী লোক ঘটনাটি দেখে চিৎকার শুরু করে। সেই সময় ওই রাস্তা দিয়ে আবগারি দপ্তরের কোলাঘাট সার্কেলের ও.সি.রাহুল দাস রেইড করতে যাচ্ছিলেন। রাহুলবাবু পথচারীর চিৎকার শুনে গাড়িটিকে ধাওয়া করলে দুষ্কৃতকারীরা ওই ব্যবসায়ীকে পাঁশকুড়া থানার অন্তর্গত জিঞাদা বাজার এলাকায় জোরপূর্বক ঠেলে ফেলে দেয়। এরপর রাহুলবাবু পাঁশকুড়া থানার পুলিশের মেজবাবুর দৃষ্টি আকর্ষণ করলে কোলাঘাট থানার পুলিশ গাড়ীটিকে ধাওয়া করে বুড়ারীর কাছে গাড়ী সহ গাড়ীর ড্রাইভারকে আটক করে। এবং আহত কৃশানুকে পাইকপাড়ী হাসপাতালে চিকিৎসা করিয়ে কোলাঘাট থানায় নিয়ে যায়।
ওই ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই গতকাল ৩০ শে জুলাই দীঘার বাসিন্দা শংকর প্রামাণিককে জমি কেনার টোপ দিয়ে বাড়িতে ডেকে এনে বাড়বড়িশা গ্রামের ভাড়াটিয়ে সঞ্জয় দোলই ও তার দলবল অনলাইনে ৯৬,০০০ টাকা হাতিয়ে নেয়। পরে আরো ৫ লক্ষ টাকা মুক্তিপণ দাবী করে ৪ ঘন্টা ধরে তাকে মারধর করতে থাকে। যদিও শংকর প্রামাণিক পুকুরে ঝাঁপ দিয়ে কোনরকমে প্রাণে বাঁচে ওই যাত্রায়।
এই রকমই পাঁশকুড়া ও কোলাঘাট থানার অন্তর্গত মুম্বাই রোডের কোলাঘাট থেকে মেচগ্রামের মধ্যেকার এলাকায় প্রায় প্রতিদিন চুরি -ছিনতাই-রাহাজানি-অপহরণ সহ নানা ধরনের অসামাজিক কার্যকলাপ ঘটছে ও তা বেড়েই চলেছে। ওই পরিপেক্ষিতে মুম্বাই রোডের কোলাঘাট থেকে মেচগ্রাম এলাকায় পুলিশী নজরদারি বাড়ানো সহ দুই থানার বর্ডার বরদাবাড় ও জিঞাদার মাঝে পুলিশ পিকেটের দাবীতে আজ নাগরিক সুরক্ষা কমিটির পক্ষ থেকে জেলা শাসক ও পুলিশ সুপারের নিকট স্মারকলিপি দেওয়া হয়। ওই স্মারকলিপির প্রতিলিপি কোলাঘাট থানার ও.সি. ও কোলাঘাটের বিডিও কেও দেওয়া হয়।
কমিটির মুখপাত্র নারায়ণ চন্দ্র নায়ক বলেন, কোলাঘাট ও পাঁশকুড়া থানার বর্ডার এরিয়া জিঞাদা ও বরদাবাড় বাজার মধ্যবর্তী স্থান বর্তমানে দুষ্কৃতকারীদের স্বর্গরাজ্য হয়ে উঠেছে। গত ২০২৩ সালে দুষ্কৃতকারীদের দ্বারা ওই স্থানে স্বর্ণ ব্যবসায়ী সমীর পড়িয়া খুন হয়েছিল। এরপরও প্রায় প্রতিদিন চুরি-ছিনতাই-অপহরণ- বেআইনি তেল কাটিং-গাড়ি থেকে নামী-দামী জিনিসপত্র নামিয়ে নেওয়া সহ নানা ধরনের অসামাজিক কার্যকলাপ ঘটেই চলেছে ওই এলাকায়।
সেজন্য ওই স্মারকলিপি মারফত পাঁশকুড়া ও কোলাঘাট থানার অন্তর্গত কোলাঘাট থেকে মেচগ্রাম পর্যন্ত ওই এলাকায় সর্বক্ষণের পুলিশের নজরদারী সহ কোলাঘাট-পাঁশকুড়া থানার বর্ডার এলাকা জিঞাদা-বরদাবাড় বাজারের মাঝামাঝি স্থানে পুলিশ পিকেট,রাতে ওই এলাকায় পথবাতির বন্দোবস্ত,দেউলবাড়ে বাস-স্টপেজ চালুর জন্য আবেদন জানানো হয়েছে।
দ্রুত এ বিষয়ে উপযুক্ত পদক্ষেপ গ্রহণ করা না হলে কমিটি এলাকার বাসিন্দাদের নিয়ে বৃহত্তর আন্দোলনের কর্মসূচি নিতে নিতে বাধ্য হবে বলে নারায়ণবাবু জানান।
0 Comments