দাসের ঘরে ধান, ময়না রাজার মান। এখনো ময়নার প্রবীণ নাগরিকদের মুখ থেকে কথাটি শোনা যায়। কথাটির সঙ্গে ময়নার অনেক প্রাচীন ঘটনাবলীর সংযোগ্ রয়েছে। ময়না ব্লকের ময়না টু গ্রাম পঞ্চায়েতের অন্তর্গত দক্ষিণ ময়না গ্রামের দাস পরিবার। ময়নার প্রাচীন নামকরা একটি পরিবার। আগেকার জমিদার পরিবার। পরিবারের কুলো দেবতা দামোদর জীউ। এই দামোদর জিউ প্রত্যেক বছর মাঘী পূর্ণিমার পুন্য লগ্নে বিশেষভাবে পূজিত হন। সেই সঙ্গে মাঘী পূর্ণিমার শেষ লগ্নে গোজিনায় আগমনের মধ্য দিয়ে গোজিনা রাস মেলার শুভ সূচনা ঘটে। পরপর পাঁচ দিন চৌটলে করে বাদ্যযন্ত্রসহকারে এবং হরিনাম সংকীর্তনের মধ্য দিয়ে দামোদর জিউকে গোজিনায় রাস মঞ্চে আনা হয়। তবে বিশেষ কারণে কোন ভক্তের মানসিক থাকলে এক -দুদিন দামোদর জিউকে গোজিনা রাস মেলায় অতিরিক্ত আনা হয়। ২০২৫ সালে মাঘী পূর্ণিমার পর থেকে পরপর ৭দিন গোজিনায় আনা হয়। এ বছর ভক্তগণ চার দিন ক্ষীরভোগ নিবেদন করেন। এখানকার ক্ষীর ভোগ নিবেদনের বিশেষত্ব হল ১০০ গ্রাম সুজিতে এক লিটার দুধ এবং পরিমাণ মতো চিনি, কাজু, কিসমিস। ভক্তগুলো সারা বছর দামোদর জিউ এর প্রসাদ পাওয়ার জন্য অপেক্ষা করে থাকেন। রাসের কয়েকদিনে ভক্তগণের মনের আশা পূরণ হয়। বছরে অন্য সময় দামোদর জীউ এর স্থায়ী মন্দিরে ক্ষীরভোগ নিবেদন করতে চাইলে মন্দির কমিটির সঙ্গে যোগাযোগ করে বিশদে জানতে হবে।আজ ভোর বেলায় এ বছরের মত শেষবার দামোদর জীউকে আগমন হয় এবং বিকেল বেলায় প্রত্যাগমন হয় । দামোদর জিউ এর প্রত্যাগমনের মুহূর্তর সাক্ষী থাকার জন্য হাজার হাজার ভক্ত সমাগম হয় । যার ফলে কয়েক কিলোমিটার রাস্তা অতিক্রম করে দামোদর জীউকে দক্ষিণ ময়না গ্রামে স্থায়ী মন্দিরে নিয়ে যেতে কয়েক ঘন্টা লেগে যায়। এ বছরের মত দামোদর জিউয়ের আগমন এবং প্রত্যাগমন সমাপ্ত হলো। তবে মেলা আরো কয়েকদিন চলবে।
0 Comments