ইতিমধ্যে আবাস যোজনা নিয়ে সার্ভে শুরু হয়ে গিয়েছে। গত ২০২২ সালে আবাস যোজনার যে টাকা কেন্দ্র সরকারের দেওয়ার কথা ছিল, উপভোক্তারা তা আজও পায়নি। তাই মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি নির্বাচনের পূর্বে ঘোষণা করেছিল, ওই সব উপভোক্তাদের রাজ্য সরকারের তহবিল থেকে আবাস যোজনার টাকা দেওয়া হবে। আর তার সার্ভে ইতিমধ্যে শুরু হয়েছে। পূর্ব মেদিনীপুর জেলা সহ ময়না ব্লকেও তার ব্যাতিক্রম নেই। কিন্তু শোনা গিয়েছে এই সার্ভের কিছুটা গরমিল চলছে। তাই ময়না ব্লকের বিভিন্ন অঞ্চলের প্রধান, কর্মাধ্যক্ষ কিংবা অঞ্চল নেতৃত্বরা ময়না ব্লকের বিডিও সমীর পানের সঙ্গে একটি আলোচনায় বসেন। জানা গিয়েছে 2022 সালে যে সব উপভোক্তাদের নাম আবাস যোজনার লিস্টে ছিল, তখন তারা সরকারের নির্দেশে নতুন বাড়ী গড়ে তোলার লক্ষ্যে পুরানো বাড়িগুলো ভেঙে দিয়েছিল। কিন্তু কেন্দ্রীয় সরকারের বঞ্চনার আর বাড়ির টাকা পেয়ে ওঠা হয়নি। তাই কিছু কিছু উপভোক্তা প্রাকৃতিক বিপর্যয়কে মোকাবেলা করতে সম্পূর্ণ না হলেও কিছুটা করে বাড়ি তৈরি করে নিয়েছে। যাতে তারা একটু স্বাচ্ছন্দে বসবাস করতে পারে। কিন্তু জানা গিয়েছে এখন নতুন করে সার্ভে হচ্ছে এমনই যে, যাদের বাড়ি তৈরি হয়ে গিয়েছে তারা আর টাকা পাবে না, এরই প্রতিবাদ জানিয়ে আজ ময়না বিডিওর কাছে উপস্থিত প্রধান সহ কর্মাধ্যক্ষরা।
এদিনের এই কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন জেলা পরিষদের বন ও ভূমি কর্মাধ্যক্ষ অভয়া দাস, জেলা পরিষদের সদস্য অভিজিৎ আদক, ময়না পঞ্চায়েত সমিতির শিক্ষা কর্মাধ্যক্ষ সন্দীপব্রত দাস, ময়না পঞ্চায়েত সমিতির স্বাস্থ্য কর্মাধ্যক্ষ সুশান্ত ভৌমিক, ময়না পঞ্চায়েত সমিতির বন ও ভূমি কর্মাধ্যক্ষ সন্দীপন জানা, ময়না পঞ্চায়েত সমিতির বিদ্যুৎ কর্মাধ্যক্ষ গোলক বিহারী বাড়ই, ময়না পঞ্চায়েত সমিতির পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ নাজিবর রহমান, ময়না পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি রঞ্জিত বল, পরমানন্দপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান মৃণাল কান্তি সামন্ত, গোকুলনগর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান পাপিয়া পাইক, শ্রীকন্ঠা গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান অনিমেষ বর্মন, রামচক গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান সুচিত্রা ভৌমিক, নৈছনপুর ২ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান পিয়ালী দাস গুছাইত, নৈছনপুর এক নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান সবিতা সিংহ, ময়না টু গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান নমিতা দোলাই, ময়না ১ গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান গৌতম দরবার সহ অন্যান্য একাধিক নেতৃত্বগন।
ময়না ব্লকের পরমানন্দপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান মৃণাল কান্তি সামন্ত জানান দীর্ঘদিন ধরে ঘর ভেঙ্গে যেসব উপভোক্তারা আবাস যোজনার কেন্দ্রীয় সরকারের টাকা পায়নি, মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জির নির্দেশে আবারও টাকা পাওয়ার জন্য নতুন করে সার্ভে শুরু হয়েছে। তিনি আরও জানান ২০২২ সালের ডিসেম্বর মাসে যখন পূর্ব মেদিনীপুরের জেলাশাসক ছিলেন পূর্ণেন্দু মাজী, তিনি এখনও জেলা শাসক আছেন এবং তখন ময়না ব্লকে বিডিও ছিলেন রাজীব সরদার, ইনারা উপভোক্তাদের নিয়ে ঘর ভেঙ্গে নতুন করে ঘর তৈরি করার একটা সময়সীমা বেঁধে দিয়েছিলেন। জেলাশাসক এবং বিডিওর নির্দেশমত বেশ কিছু গরীব মানুষ সেই সময় ঘর ভেঙ্গে নতুন ঘর তৈরির জন্য টাকা পাওয়ার আশায় অপেক্ষা করছিলেন। দীর্ঘ দুবছর ধরে টাকা না পাওযায় তারা বিপুলভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। অবশেষে তারা তাদের জীবনের শেষ সম্বল টুকু বিক্রি করে যে যেমন পেরেছে বাড়ি তৈরি করে বাসস্থানের উপযোগী করে তুলেছে। কেউবা বাড়ি সম্পূর্ণ করতে পেরেছে কেউ এখনো সম্পন্ন করতে পারেনি। মৃণাল বাবু জানান তাদের কাছে খবর ছিল এইসব উপভোক্তারা আর আবাস যোজনার টাকা পাবে না। এই প্রতিবাদে আজ আমরা বিডিও অফিসে একটা লিখিত ভাবে ডেপুটেশন দিয়েছি। তিনি আরও জানান আমাদের দাবি এই সব উপভোক্তাদের যারা কিছুটা বাড়ি করেছে কিংবা সম্পূর্ণ বাড়ী করে নিয়েছে তাদেরকে এই আবাস যোজনার তালিকার মধ্যে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। ময়না ব্লকের বিডিও সমীর পান জেলাশাসকের সঙ্গে কথা বলবেন এবং যাতে এদের নাম কিভাবে রাখা যায় সেদিকে ব্যবস্থা নেবেন এমনই আশ্বাস দিয়েছেন।
0 Comments